এস এম বদরুল আলম ॥ বেসরকারি খাতের সক্রিয় অংশগ্রহণে পৃথিবীর দেশে দেশ শিল্পায়নের যে বিপ্লব ঘটে গেছে তার থেকে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। গার্মেন্টস শিল্পের পর খুব নিরবে যে খাতে বিপ্লব ঘটে গেছে সেটি হচ্ছে আমাদের দেশের ওষুধ শিল্প। ৯০% আমাদানীর এই ওষুধ শিল্প বর্তমানে দেশের চাহিদার ৯৮ ভাগ মিটিয়ে আমেরিকা, ইউরোপসহ বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে বাংলাদেশের ৫৪টি প্রতিষ্ঠানের তৈরি ওষুধ বিশ্বের ১৫০টিরও বেশী দেশে রফতানী হচ্ছে।
প্রচীনকাল থেকে আমাদের চিকিৎসা শাস্ত্রের নানা বৈচিত্রতা বেশ লক্ষনী। কবিরাজী, আয়ুরবেদী, ইউনানী, আধুনিক হারবালসহ হোমিওপ্যাথী ও এ্যালোপাথীক ঔষধের সমন্বয়ে একটি বৈচিত্রময় স্বাস্থ্য, চিকিৎসা ও ওষুধনীতি মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশাল অবদান রেখে চলেছে। যা আধুনিকতায় শুধু সমৃদ্ধই হয়নি; আমরা তার মান নিয়ন্ত্রনে ওষুধ প্রশাসনের মত একটি স্বনামধন্য সরকারী অধিদপ্তরের মাধ্যমে একটি জাতীয় নীতিমালার আওতায় সকল চিকিৎসা ব্যবস্থার সমন্বয় ও লালন করে চলেছি। যা বিশ্বে বিরল।
বৈশ্বিক করোনার কারনে হোমিওপ্যাথী ও এ্যালোপ্যাথী শাস্ত্রমতে চিকিৎসা ব্যবস্থা মোটামুটি অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারলেও ভালো নেই প্রাচীন চিকিৎসা স্বাস্থ্যের সাথে জড়িত কবিরাজী, আয়ুরবেদী, ইউনানী, হারবালসহ হোমিওপ্যাথী শিল্পের প্রায় ৫৫০ টি কোম্পানির সাড়ে তিন লক্ষ্য শ্রমিক কর্মচারীরা। তাদের জন্য প্রণোদীত হযনি কোন সরকারী প্রণোদনা। এই কোম্পানিগুলির সাথে জড়িত রয়েছে, চাকরিজীবী রিপেজেনটিভ, হারবাল দোকানগুলো বোতল সরবরাহকারী কোম্পানি, কাটুন প্রস্তুতকারী কোম্পানি, লেভেল, প্যাকেটিং, কাঁচামাল ট্রান্সপোর্টের সাথে জড়িত সাড়ে তিন লক্ষ্য শ্রমিক কর্মচারীরা। তারা ও তাদের পরিবার নিদারুন কষ্টে আছে। একসময় আদি চাকাৎসা ব্যবস্থা হারবাল ওষুধের মাধ্যমেই মানুষের চিকিৎসা চলতো, রোগ নিরাময় হতো। যুগের বিবর্তনে এই ওষুধের কার্যক্রম নুইয়ে পড়েছে। আমাদের দেশে রয়েছে ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক হাসপাতাল, ইউনানী আয়ুর্বেদিক কলেজ, হোমিও কলেজ। কিন্তু কলেজ থেকে পাশ করার পর ইউনানী ঔষধ, আয়ুর্বেদিক ওষুধ ও হোমিও ওষুধ চিকিৎসকগণ কোন চাকরি বা চেম্বার খুলে বসার তেমন কোন সুবিধা পান না।
ইউনানী-আয়ুর্বেদিক-হারবাল ও হোমিও চিকিৎসক নেতাদের সঙ্গে বক্তব্য জানতে চাইলে তারা বলেন সরকারি সাহায্য করলে আমরা অনেক ভালো করতে পারতাম। সরকারি সঠিক নির্দেশনা পেলে এবং সরকারি সহযোগিতা তথা বিনা সুদে আমাদেরকে ঋণ দিলে আমরা এসব ওষুধের গবেষনা ও তার গুণগত মান ধরে রাখতে পারব। এবং বেকারত্ব দূরিকরণে এই শিল্পে আরো অধিক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারব।
করোণা দূর্যোগ মোকাবেলা প্রসঙ্গে নেতৃবৃন্দ মনে করেন, এইমুহুর্তে এই শিল্পের সাথে জড়িত প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষকে বাঁচাতে মানবীকতার পরিচয দিতে হবে। অনতিবিলশ্বে তাদেরকে সরকারী প্রনোদনার আওতায় আনার জন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করেন।